বনবিট কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ঘুষ ও বনজ সম্পদ পাচারের অভিযোগ
মো. কামাল উদ্দিন, চকরিয়া:
চুনতি বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য রেঞ্জাধীন আজিজনগর বনবিট এলাকায় সংরক্ষিত পাহাড় কেটে একাধিক পানের বরজ নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে। এলিফ্যান্ট আন্ডারপাসসংলগ্ন এই এলাকায় বনভূমি দখল ও পরিবেশ ধ্বংসের ঘটনায় আজিজনগর বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্যের দায়িত্বপ্রাপ্ত বনবিট কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ঘুষ গ্রহণ ও বনজ সম্পদ পাচারে সহযোগিতার গুরুতর অভিযোগ উঠে এসেছে।
আজিজনগর বনবিটের জাঙ্গালিয়া মাজারের পশ্চিমে, এলিফ্যান্ট আন্ডারপাসের দক্ষিণে খাদেম আহামদের খামারের উভয় পাশে কমপক্ষে আটটি পানের বরজ গড়ে তোলা হয়েছে। এর মধ্যে চারটি বরজ সম্প্রতি পাহাড় কেটে নির্মাণ করা হয়েছে, যা আইন অনুযায়ী সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক পানের বরজ মালিক জানান, প্রতি বরজ বাবদ ১৫ হাজার টাকা এবং পাহাড় কাটার জন্য আরও ১০ হাজার টাকা করে তারা আজিজনগর বনবিট কর্মকর্তা আসিফ মিয়াকে দিয়েছেন। তবে অভিযোগ অস্বীকার করে বনবিট কর্মকর্তা আসিফ মিয়া বলেন, তিনি কোনো অর্থ নেননি এবং অভিযোগগুলো উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এসময় তিনি ঘটনাস্থলে যাচ্ছেন বলে জানান।
উদ্বেগজনকভাবে, চুনতি বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য রেঞ্জ কার্যালয় ও বনবিট অফিসের এক কিলোমিটারের মধ্যেই একাধিক পাহাড় কেটে বরজ নির্মাণ হলেও এ পর্যন্ত কোনো উচ্ছেদ অভিযান বা মামলা হয়নি। এতে বনবিভাগের তৎপরতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
এ বিষয়ে চুনতি বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য রেঞ্জ কর্মকর্তা গাজী বাহার উদ্দিন বলেন, অভিযোগগুলো গুরুত্বসহকারে তদন্ত করা হচ্ছে এবং অনিয়ম প্রমাণিত হলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ও আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পরিবেশবিদদের মতে, এলিফ্যান্ট আন্ডারপাসসংলগ্ন পাহাড় কাটা ও বরজ নির্মাণ হাতির চলাচলের করিডোর মারাত্মকভাবে সংকুচিত করছে, যা মানুষ ও হাতি সংঘর্ষের ঝুঁকি বাড়াচ্ছে।
স্থানীয়দের দাবি, দ্রুত অবৈধ বরজ উচ্ছেদ, পাহাড় পুনরুদ্ধার এবং নিরপেক্ষ তদন্ত না হলে চুনতি অভয়ারণ্য স্থায়ী পরিবেশগত বিপর্যয়ের মুখে পড়বে।
